ভাবুন, এক সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন Google, YouTube, Instagram, Facebook, X, এমনকি ChatGPT আর কাজ করছে না।
অবিশ্বাস্য শোনালেও, সাম্প্রতিক এক ভাইরাল পোস্ট এবং Harsh Goenka-র টুইটের পর থেকে এই প্রশ্নটি ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে যদি আমেরিকা ভারতে গুগল এবং ইন্সটাগ্রাম নিষিদ্ধ হয়, তাহলে আমাদের প্ল্যান-বি কী?
কেন এই আলোচনা হঠাৎ এত গুরুত্ব পেল
Harsh Goenka-র পোস্টে বলা হয়েছিল—ভারত যদি প্রযুক্তিগতভাবে পুরোপুরি আমেরিকার উপর নির্ভরশীল থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে বড় বিপদের মুখে পড়তে পারে। এই মন্তব্যের পর থেকেই টুইটার ও লিংকডইনে শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক।
অনেকে মনে করিয়ে দেন, যুক্তরাষ্ট্রে অনেক সময় অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদলে যায়। যেমন H1B ভিসা ইস্যু নিয়ে একসময় রাজনৈতিক চাপেই নীতি পরিবর্তন হয়েছিল। তাই USA BANS GOOGLE AND INSTAGRAM IN INDIA হয়তো অসম্ভব নয়।
বাস্তব দিক থেকে এটা কতটা সম্ভব
অর্থনৈতিক দিক থেকে দেখলে এই সিদ্ধান্ত একেবারেই অযৌক্তিক। কারণ আমেরিকার প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো ভারতের বাজার থেকে বছরে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার আয় করে। এত বড় রাজস্ব উৎস তারা সহজে বন্ধ করবে না।
তবু রাজনীতি শুধুই অর্থনীতির যুক্তিতে চলে না। কখনও কখনও অভ্যন্তরীণ ভোটার চাপ, রাজনৈতিক বার্তা বা কৌশলগত কারণে অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তাই Zoho-এর প্রতিষ্ঠাতা ও অন্যান্য ভারতীয় উদ্যোক্তারা বলছেন এখনই সময় দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি নেওয়ার।
নির্ভরতা শুধু অ্যাপ নয়, আরও গভীরে
আমরা শুধু Instagram বা ChatGPT-এর কথা ভাবি, কিন্তু বাস্তবে নির্ভরতা আরও বিস্তৃত।
- অপারেটিং সিস্টেম: Windows ও macOS পুরোপুরি বিদেশনির্ভর।
- সেমিকন্ডাক্টর চিপ: ফোন থেকে ল্যাপটপ পর্যন্ত প্রায় সব ডিভাইসেই আমেরিকা বা তাদের মিত্র দেশের তৈরি চিপ।
- ক্লাউড ও সফটওয়্যার অবকাঠামো: Amazon, Google, Microsoft সবই US-ভিত্তিক পরিষেবা।
এই কারণেই Zoho-এর প্রতিষ্ঠাতা বলেছেন, একটি ১০ বছরের “National Mission for Tech Reliance” দরকার, যা ভারতকে ধীরে ধীরে স্বনির্ভর করবে।
কত অর্থ লাগতে পারে
প্রাথমিকভাবে কেউ কেউ ১ বিলিয়ন ডলার প্রস্তাব করলেও বাস্তবে এটি যথেষ্ট নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৪০-৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন আগামী এক দশকে, যদি সত্যিই USA BANS GOOGLE AND INSTAGRAM IN INDIA হয়।
এটি শুধুমাত্র সরকারি উদ্যোগ নয়, বেসরকারি খাতকেও সমানভাবে অংশ নিতে হবে।
ভারতের এখনই যেসব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত
জাতীয় টেক মিশন শুরু করা
দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ১০ বছরের পরিকল্পনা প্রয়োজন।
দেশীয় বিকল্প তৈরি করা
Search Engine, Social Media, AI Tools, Developer Platform—সব ক্ষেত্রে ভারতীয় উদ্যোগে বিকল্প তৈরি করতে হবে।
সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে বিনিয়োগ
নিজস্ব ফ্যাব, ডিজাইন হাউস ও গবেষণায় প্রণোদনা দিতে হবে।
সরকারি ক্রয়ে দেশীয় সফটওয়্যারের অগ্রাধিকার
স্কুল, হাসপাতাল ও সরকারি অফিসে দেশীয় সফটওয়্যার ব্যবহারের নীতি চালু করা যেতে পারে।
নীতিগত ও কর ছাড় সুবিধা
লোকাল প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্টকে উৎসাহ দিতে বিশেষ ট্যাক্স ইনসেনটিভ প্রয়োজন।
প্রচার ও জনসচেতনতা
সেলিব্রিটি প্রচারণা ও সহজ অনবোর্ডিং সিস্টেমের মাধ্যমে ভারতীয় অ্যাপ জনপ্রিয় করতে হবে।
দক্ষতা বৃদ্ধি
AI, Data Analytics, Cloud ও Embedded Systems-এর মতো বিষয়ে প্রশিক্ষণ বাড়াতে হবে।
ইতিমধ্যে দেশীয় কোম্পানির উদ্যোগ
Zoho-এর মতো কোম্পানি ইতিমধ্যে শক্ত অবস্থানে আছে। পাশাপাশি ভারতীয় স্টার্টআপগুলো AI-ভিত্তিক চ্যাট অ্যাপ, সার্চ ইঞ্জিন ও সোশ্যাল মিডিয়া বিকল্প তৈরি করছে। এখন দরকার ব্যবহারকারীর আস্থা ও সরকার-নেতৃত্বাধীন প্রচারণা।
দক্ষতা বাড়ান, ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হন
যদি USA BANS GOOGLE AND INSTAGRAM IN INDIA সত্যি ঘটে, তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা বাড়বে Data Analyst, AI Specialist ও Cloud Engineer-এর।
একটি মানসম্মত Data Analytics কোর্স এখন আপনার ক্যারিয়ারের জন্য কার্যকর হতে পারে—যেখানে হাতে-কলমে প্রজেক্ট, GenAI-এর ব্যবহার এবং ইন্ডাস্ট্রি সার্টিফিকেশন থাকবে।
এমন প্রশিক্ষণ কেবল চাকরির সুযোগই বাড়াবে না, আপনাকে ভারতের ভবিষ্যৎ টেক-ইকোসিস্টেমের অংশ করে তুলবে।
🔍আপনার মতে যদি আমেরিকা ভারতে গুগল এবং ইন্সটাগ্রাম নিষিদ্ধ করে, তাহলে ভারতের প্রথম পদক্ষেপ কী হওয়া উচিত? নিচে মন্তব্যে জানান। সেরা মন্তব্যগুলো পরবর্তী আলোচনায় তুলে ধরা হবে।










